Blog Archive

Tuesday, January 28, 2020

দারিদ্রবিমোচন ও দারিদ্রের দুষ্টুচক্র প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ, কয়েক বছরের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবে ।
  এই লক্ষ নিয়ে দারিদ্রের হার 0% এ নামিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার ।
আমি কথা বলবো উপরোক্ত বিষয় নিয়েই, দারিদ্র দূর করার প্রধান উপায় উৎপাদনশীলতা , এর মধ্যে শিল্প কারখানা ও আধুনিক কৃষিই আগে , সাথে ব্যবসা বড় ভুমিকা পালন করে । এর মধ্যে ক্ষুদ্র ব্যবসা অন্যতম । বাংলাদেশে প্রায় ১.৫ কোটি মানুষ ক্ষুদ্র ব্যবসার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে ,  এই সকল মানুষ অর্থ সংকটে সব সময় ভুগতে থাকে, তারা তাদের ব্যবসার জন্য ব্যাংক ঋণ নিতে চাইলে বড় বাধা এক বছরের প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকার লেনদেনের তথ্য জমা দিতে হবে, একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর পক্ষে কখনই তা সম্ভব না, ফলে তারা ব্যাংক লোন পাচ্ছে না, এজন্য তারা বিভিন্ন ঋণদান সমিতি বা ব্যক্তির নিকট থেকে উচ্চ সুদে টাকা নিয়ে ব্যবসা করতে যেয়ে  তা শোধ দিতে হিমসিম খাচ্ছে, ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্থাবর- অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় করে তা পরিশোধে বাধ্য হচ্ছে, তারপর আরো দরিদ্র হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে । এভাবে দরিদ্রতা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে ।  কিন্ত বড় ব্যবসায়ীরা বড় ঋণ খুব সহজেই পেয়ে যাচ্ছে , তারপর খেলাপীও হচ্ছে, তারা টাকা বিদেশেও পাচার করছে ।প্রশ্ন হলো , ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দরিদ্র রেখে কিভাবে দেশ ধনী হবে ? যেখানে ধনীরা অর্থ চাইলেই পেয়ে যাচ্ছে আর দরিদ্ররা উচ্চহারের সুদের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে মরছে ? অথচ এ পর্যন্ত কোন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ঋণখেলাপী হয়েছে তার প্রমাণ নেই । যত ঋণ খেলাপী - মানী লন্ডার সবই ধনীক শ্রেণীর, অথচ ব্যাংকগুলো তাদেরকেই দিচ্ছে, আর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীরা ব্যাংক স্টেটমেন্টের চক্রে ঘুরপাক খাচ্ছে । কিন্তু এই বাস্তবতার মধ্যেও দরিদ্রতা দূরিকরণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে সরকার থেকে বলা হয় ।ব্যাংক লোন ছাড়া শুধু পরিশ্রম আর সমিতি বা ক্ষুদ্র লোন নিয়ে ব্যবসা দাড় করানো সম্ভব না, তাই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আরো দরিদ্র হয়ে পড়ছে ।দেশের জনগোষ্টীর একটা বড় অংশকে দরিদ্র রেখে উন্নত দেশ হওয়া কি সম্ভব? না কি দরিদ্রতা দূর করা সম্ভব ? ব্যাংকগুলো  টাকা দিচ্ছে বড় ব্যবসায়ে সেই টাকা পাচার হচ্ছে বিদেশে , আর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা টাকার অভাবে ব্যবসা করতে পারছে না । সরকার বা ব্যাংকগুলো ভাবছেই না ৫-১০ লক্ষ টাকার লেনদেন করার সক্ষমতা যদি একজন দোকানদারের থাকতো সে কখনই ঋণ নিতে যেত না ।
  
তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ , দেশের বৃহৎ দরিদ্র জনগোষ্টীকে দারিদ্রের দুষ্টুচক্র থেকে বের হওয়ার সুযোগ করে দিন , উচ্চ সুদ হারের যাতাকল থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বাচান ্। ব্যাংকগুলো যেন ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট ও জাতীয় পরিচয় পত্রের দ্বারা সহজে ঋণ দেয়, ও তদারকি করে । 
  এই বেপারে বাংলাদেশ ব্যাংক বড় ভূমিকা পালন করতে পারে, কিন্ত তা  করতে কখনই দেখা যায় না, সেই বিষয়টাও দেখার অনুরোধ করছি । 

                                                                                          মোঃ রাকিবুল ইসলাম 
                                                                                           একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী